সুইজারল্যান্ডের দাভোসে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার টুর্কের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এ বৈঠকে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে।
জুলাই-আগস্ট আন্দোলন নিয়ে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন
ভলকার টুর্ক জানান, গত বছরের জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের সময় মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন তাদের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
- প্রতিবেদন প্রকাশের সময়: ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি।
- প্রকাশের আগে শেয়ার করা হবে: বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে।
ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগগুলো বিশ্লেষণ, দায় নির্ধারণ এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকানোর সুপারিশ করবে।
ড. ইউনূস জাতিসংঘের এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, ছয়টি স্বাধীন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন একই সময়ে প্রকাশিত হবে, যা জাতিসংঘের প্রতিবেদনের পরিপূরক হিসেবে কাজ করবে।
রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা
ড. ইউনূস রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘের সহায়তা কামনা করেন। তিনি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ‘জাতিসংঘ-ওভারসিন সেফ জোন’ গঠনের প্রস্তাব দেন।
- জাতিসংঘের প্রতিক্রিয়া: ভলকার টুর্ক জানান, তিনি এ বিষয়ে মিয়ানমারে জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূতসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
- আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ ফিরিয়ে আনার আহ্বান: ড. ইউনূস এবং ভলকার টুর্ক রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আসন্ন উচ্চপর্যায়ের বৈঠককে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মত প্রকাশ করেন।
জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের মূল লক্ষ্য হলো:
- অভিযোগের সত্যতা উদঘাটন।
- দায়বদ্ধতা চিহ্নিত করা।
- মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণ বিশ্লেষণ।
- ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা রোধে সুপারিশ প্রণয়ন।
রোহিঙ্গা সংকট: মানবিক বিপর্যয় এবং সমাধানের প্রচেষ্টা
ড. ইউনূস রোহিঙ্গা সংকটকে বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ মানবিক সংকটগুলোর একটি বলে উল্লেখ করেছেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হারানো মনোযোগ ফিরিয়ে আনতে উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন আয়োজনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন তিনি।
ভলকার টুর্কের মন্তব্য:
রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান অত্যন্ত জরুরি। জাতিসংঘ এই সংকট নিরসনে সব ধরনের সহায়তা করবে।
জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের প্রতিবেদন এবং রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে জাতিসংঘ ও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে এ আলোচনা ভবিষ্যৎ নীতিনির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।