বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরাপত্তা ভল্টে রক্ষিত সব কর্মকর্তার সেইফ ডিপোজিট সাময়িকভাবে ফ্রিজ (স্থগিত) করার নির্দেশনা চেয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরকে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের এ পদক্ষেপের উদ্দেশ্য হলো, কোনো কর্মকর্তা যাতে ভল্ট থেকে অর্থ-সম্পদ সরিয়ে নিতে না পারেন, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক ও সহকারী মুখপাত্র শাহরিয়ার সিদ্দিকী গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দুদকের চিঠির মূল বিষয়বস্তু
দুদকের পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জামান গত ২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে চিঠি পাঠান। এতে উল্লেখ করা হয়—
🔹 ২৬ জানুয়ারি আদালতের অনুমতিতে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে দুদকের একটি অনুসন্ধানী দল বাংলাদেশ ব্যাংকের কয়েন ভল্টে অভিযান চালায়।
🔹 অনুসন্ধানে সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরীর সেইফ ডিপোজিট থেকে বিশাল অঙ্কের অর্থ ও সম্পদের হদিস মেলে।
🔹 উদ্ধার করা সম্পদের মধ্যে ছিল—
- ৫৫ হাজার ইউরো
- ১ লাখ ৬৯ হাজার ৩০০ মার্কিন ডলার
- ১০০৫.৪ গ্রাম স্বর্ণ
- ৭০ লাখ টাকার এফডিআর (ফিক্সড ডিপোজিট রিসিপ্ট)
🔹 রেজিস্ট্রার পরীক্ষা করে দেখা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের আরও কিছু কর্মকর্তার সিলগালা করা সেইফ ডিপোজিট রয়েছে, যা অপ্রদর্শিত সম্পদ থাকার ইঙ্গিত দেয়।
🔹 দুদক মনে করছে, অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগের তদন্তে এসব লকার গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।
অর্থ উপদেষ্টার সম্মতি ও ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ
🔹 ৩০ জানুয়ারি বিকাল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত দুদক চেয়ারম্যান ও অর্থ উপদেষ্টার বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রক্ষিত সম্পদের বিষয়টি উত্থাপিত হয়।
🔹 আলোচনায় অর্থ উপদেষ্টা ভল্টে থাকা লকারগুলোর সাময়িক স্থগিতাদেশের বিষয়ে সম্মতি প্রদান করেছেন।
পরবর্তী করণীয়
✅ বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এই নির্দেশনার ভিত্তিতে যথাযথ পদক্ষেপ নেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
✅ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভল্ট থেকে কোনো সম্পদ সরানোর সুযোগ না দিতে কড়া নজরদারি বাড়ানো হবে।
✅ দুদক তার অনুসন্ধান অব্যাহত রাখবে এবং প্রয়োজনে আরও অভিযান পরিচালনা করবে।
🔍 এই ঘটনার প্রভাব ও আলোচনা
🔹 সরকারি কর্মকর্তাদের অপ্রদর্শিত সম্পদ ও দুর্নীতির বিষয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।
🔹 বাংলাদেশ ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কতটা কার্যকর, তা নিয়েও বিতর্ক শুরু হয়েছে।
🔹 এই অনুসন্ধানের ফলে অন্য দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।