বিশ্ব ইজতেমার কারণে রাজধানী ঢাকার উত্তরা ও গাজীপুরের সড়কগুলোতে গণপরিবহন সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে টঙ্গী থেকে উত্তরার দিকে আসা সড়কগুলোতে অফিসগামী যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) সকালে উত্তরার জসীমউদ্দিন মোড়ে সরেজমিনে দেখা যায়, শত শত যাত্রী গণপরিবহনের জন্য অপেক্ষা করছেন, কিন্তু যানবাহনের দেখা নেই। টঙ্গী ও গাজীপুর থেকে আসা বাস চলাচল বন্ধ থাকায় অনেকেই দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
বেসরকারি চাকরিজীবী জুবায়দা রহমান জানান, “সকাল সাড়ে আটটায় অফিস শুরু, অথচ বাস না পেয়ে দাঁড়িয়ে আছি। দু-একটি বাস এলেও তাতে ওঠার উপায় নেই। কীভাবে অফিসে পৌঁছাবো, বুঝতে পারছি না!”
একই রকম ভোগান্তির কথা জানালেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পারভেজ। তিনি বলেন, “অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও বাস পাইনি। আমাদের কথা চিন্তা করে অন্তত কিছু গণপরিবহন চালু রাখা উচিত ছিল।”
রোববার সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে গাজীপুরের টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাত শুরু হয়ে শেষ হয় ৯টা ৩৫ মিনিটে। ভোর থেকেই মোনাজাতে অংশ নিতে লাখো মুসল্লি হেঁটে ইজতেমার মাঠের দিকে ছুটেছেন।
এ বিশাল জনসমাগম সামাল দিতে গাজীপুর মহানগর পুলিশ বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। ফলে রোববার ভোর ৬টা থেকে টঙ্গী-কামারপাড়া রোড, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী থেকে গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস মোড় এবং আবদুল্লাহপুর থেকে আশুলিয়ার বাইপাইল পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
বিশ্ব ইজতেমা একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় আয়োজন হলেও, নগরবাসীর স্বাভাবিক চলাচল বিঘ্নিত হওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে কর্মজীবী ও শিক্ষার্থীদের চলাচলের জন্য বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, যা নিয়ে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর সমাধান আসবে কি না, তা এখনো অনিশ্চিত। তবে রাজধানীর কর্মজীবী মানুষের জন্য স্বাভাবিক যান চলাচল নিশ্চিত করা কি কর্তৃপক্ষের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না—এমন প্রশ্নই তুলছেন ভুক্তভোগীরা।