বাংলাদেশের বিদ্যমান শ্রম আইনকে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) মানদণ্ডে উন্নীত করতে সংস্কার কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশের কলকারখানায় শ্রমিক নিরাপত্তার উন্নয়নে কাজ করা সংগঠন ‘নিরাপন’-এর নেতাদের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকালে তিনি এ ঘোষণা দেন।
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন, “আমরা দেশের শ্রম আইনকে আইএলওর মানদণ্ডে নিয়ে যাওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ইতিমধ্যে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, এবং খুব শিগগিরই তার ফলাফল দেখা যাবে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, এই সংস্কার শ্রমিকদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফী সিদ্দিকী বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার ইতিমধ্যে শ্রমিক সংগঠন ও নির্মাতাদের সাথে একটি ১৮ দফা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তি গার্মেন্টস শিল্পে স্থিতিশীলতা এনেছে এবং পোশাক রপ্তানি বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে।”
নিরাপনের চেয়ারম্যান সাইমন সুলতানা গার্মেন্টস শিল্পে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, “শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত করতে এই সংস্কার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।” নিরাপনের স্বতন্ত্র পরিচালক তপন চৌধুরীও এই উদ্যোগকে স্বাগত জানান।
সভায় শীর্ষ পশ্চিমা ব্র্যান্ড এবং খুচরা বিক্রেতাদের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। তারা বাংলাদেশের শ্রম আইন সংস্কারের এই উদ্যোগকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের দিকে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেন। অনুষ্ঠানে এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব প্রধান লামিয়া মোরশেদ এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুনও উপস্থিত ছিলেন।
এই সংস্কার কার্যক্রম বাংলাদেশের শ্রমিকদের জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আইএলও মানদণ্ডে শ্রম আইন উন্নীত হলে শ্রমিকদের নিরাপত্তা, মজুরি এবং কাজের পরিবেশে উল্লেখযোগ্য উন্নতি ঘটবে। এছাড়া, এটি বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পকে আন্তর্জাতিক বাজারে আরও প্রতিযোগিতামূলক করে তুলবে।